নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫/০৯/২০২৫ ১:৩৪ পিএম

এন.এ সাগর •
বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ ও সমুদ্রের ‘পানি পরিষ্কারকারী’ খ্যাত শামুক-ঝিনুকের প্রজনন আজ ধ্বংসের মুখে। সরকারি আইনে আহরণ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন কক্সবাজার সৈকতের কবিতাচত্বর থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে নির্বিচারে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ। প্রকাশ্য দিবালোকে শ্রমিকরা বালিয়াড়ি ও পানির নিচ থেকে টনকে টন শামুক-ঝিনুক তুললেও কোনো বাধা নেই।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সমিতিপাড়ার মোহাম্মদ হেলাল, মো. আক্কাস, আনসার ও সোহেলসহ অন্তত ১৫ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ টন শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে পাচার করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সামুদ্রিক প্রাণীগুলো সমুদ্রের প্রাকৃতিক ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। এরা পানি পরিষ্কার রাখে, দূষণ প্রতিরোধ করে এবং জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করে। নির্বিচারে নিধন সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

পরিবেশবিদ শাহীন সিদ্দিকী বলেন, “সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আহরণ বন্ধ হচ্ছে না। মাঝে মাঝে অভিযানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হয়, কিন্তু পরে সিন্ডিকেটের প্রভাবে কর্মকর্তারা নীরব হয়ে যান।”
অভিযোগ রয়েছে, বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নীরব ভূমিকা এ অপরাধকে আরও উৎসাহিত করছে। সরেজমিনে তথ্যদাতার কাছ থেকে জীবিত শামুক-ঝিনুক আহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরও পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অভিযানে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে অভিযান চালায়নি।

এ বিষয়ে বনবিভাগের কক্সবাজার রেজ কর্মকর্তা জানান, জীবিত শামুক-ঝিনুক আহরণের তথ্য হাতে আসায় এবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পরিবেশ ধ্বংসে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পরিবেশবিদ ও স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, শুধু আইন প্রয়োগ নয়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি। অন্যথায় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

পাঠকের মতামত

ঢাকায় রেলক্রসিংয়ে প্রাণ হারালেন কক্সবাজারে উষা বড়ুয়া

রাজধানী ঢাকার মহাখালী রেলক্রসিংয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন কক্সবাজারের রামু উপজেলার মেরংলোয়া গ্রামের উষা বড়ুয়ার ...

টেকনাফের কচ্ছপিয়া উপকুল; মালয়েশিয়ায় পাচারের নিরাপদ রুট

টেকনাফের কচ্ছপিয়া উপকুলের বঙ্গোপসাগর দিয়ে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বঙ্গোপসারের ওই ...